রাতে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা
রাতে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা জানতে চান? আমার এই ব্লগে আজকে আপনাকে জানাবো ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার ভূমিকা মানব জীবনে অপরিসীম, ইসবগুলের ভুষি মূলত একটি প্রাকৃতিক ফাইবার যা মূলত কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
এতে প্রচুর পরিমাণে পানি শোষণ করে এবং মল কে নরম করে এবং শারীরিক কার্যকারিতা বাড়ায়। এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে ডায়রিয়া প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে ক্যাশ বা অ্যাসিডিটির সমস্যা দূর করে এবং হার্টের স্বাস্থ্যে কে উন্নত করতে সাহায্য করে। প্রত্যেকেরই উচিত সঠিক নিয়মে অর্থাৎ এক গ্লাস পানি অথবা দুধের সাথে দুই চা চামচ ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে প্রতিদিন রাতে পান করা। ইসবগুল উপমহাদেশে প্রায় সবারই পরিচিত, এবং এর উপকারিতা সম্পর্কে সবারই জানা।
আরো পড়ুন : মধু ও কালোজিরা একসাথে খাওয়ার উপকারিতা
পেজ সূচিপত্র :
- ইসবগুল মূলত কি
- ইসবগুল পুষ্টিগুনে ভরপুর
- ইসবগুলের ঔষধি গুনাগুন
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে
- রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
- গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধান করে
- ডায়রিয়া ও আমাশয় প্রতিরোধে সহায়তা করে
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে
- প্রসাবের জ্বালাপোড়া থেকে পরিত্রাণ দেয়
- ওজন কমাতে সাহায্য করে ও যৌন সক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার নিয়ম
- কেন খাবেন ইসবগুলের ভুষি
ইসবগুল মূলত কি
ইসবগুল মূলত একটি প্রাকৃতিক ফাইবার যাক কোষ্ঠকাঠিন্য , উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা করে ডায়রিয়া থেকে রক্ষা করে হজমে সাহায্য করে আমাশয় থেকে রক্ষা করে এমন আরও অনেক গুনাগুন এর মধ্যে রয়েছে। ইসবগুল গুল্ম জাতীয় গাছ এর ফুল ছোট, পাপড়ি অনেক সূক্ষ্ম হয়, বীজের খোসা আছে, এ গাছের উচ্চতা দেড় থেকে দুই ফুট পর্যন্ত হয়, ফল দুই কোষ বিশিষ্ট ৭ থেকে ৮ মিলিমিটার লম্বা হয় এবং ফলের ভিতরে তিন মিলিমিটার লম্বা বীজ থাকে যা দেখতে নৌকার মতো এবং এর খোসা পিচ্ছিল হয়।
ইসবগুল পুষ্টিগুনে ভরপুর
ইসবগুলের বহুমাত্রিক পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা মানব দেহের জন্য বিভিন্ন উপকার করে থাকে। এক টেবিল চা চামচ ইসবগুলের খুশিতে প্রায় অর্ধেকের বেশি পরিমাণ ক্যালরি থাকে, যা পুষ্টির প্রধান উপাদন।, এছাড়াও রয়েছে ৩০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ১৫ মিলিগ্রাম সোডিয়াম পনেরো মিলিগ্রাম শর্করা এবং 0.9 মিলিগ্রাম আয়রন। অতএব রাতে ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার উপকারিতা অনেক।
ইসবগুলের ঔষধি গুনাগুন
- রাতে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতার মধ্যে ওষুধি গুণাগুণ রয়েছে অনেক। যেমন এর মধ্যে এক ধরনের অগ্রপনীয় ও দ্রবণীয় খাদ্য আঁশ থাকে কোষ্ঠকাঠিন্য জন্য অনেক উপকারী।
- রাতে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার মাধ্যমে একজন ডায়রিয়া ও পাকস্থলী রোগীর ইনফেকশন সহজেই সারানো যায়।
- অনেকের গ্যাস কিংবা এসিডিটির সমস্যা থাকে যা নিয়ে চিন্তার কোন শেষ থাকে না রাতে ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার মধ্য দিয়ে এই ধরনের সমস্যার সমাধান আশা করা যায়।
- রাতে ইসবগুলের ভুষি যারা খেয়ে থাকে তারা তাদের ওজন কমানোর ক্ষেত্রে এর কার্যকারিতা বুঝতে পেরেছে এটি শরীরের ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অনেক কার্যকরী।
- অনেকে পাকস্থলী বা মল নরম করার জন্য এবং হজম প্রক্রিয়া কে উন্নত করার জন্য রাতে ইসবগুলের ভুষি খেয়ে থাকেন।
আরো পড়ুন : পুঁইশাকের উপকারিতা ও অপকারিতা
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে
কোষ্ঠকাঠিন্যর মহা ওষুধ হচ্ছে এই ইসবগুলের ভুষি। পায়েস নামে একটি রোগের সৃষ্টি হয় মূলত কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে, এবং বিশেষজ্ঞদের মতে অনেক ডাক্তাররাই রোগীদের ইসবগুলের ভুসি খেতে বলে থাকেন। রাতে ঘুমানোর আগে হালকা হালকা গরম পানিতে অর্থাৎ কুসুম গরম পানিতে ২ চামচ ইসবগুলের ভুষিয়ে মিশিয়ে খেলে কষ্ট কাঠিন্যের মত রোগ থেকে মুক্ত হওয়া যায়।
রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
ইসবগুলের ভুষিতে জিলাপির নামক এক ধরনের উপাদান রয়েছে যা মানব দেহে গ্লুকোজের শোষণ এবং ভাক্সগার প্রক্রিয়া কে বাধা প্রদান করে। যার ফলে আমাদের রক্তে খুব সহজে সুগারের পরিমাণ বাড়তে পারে না। আর আমরা জানি যে রক্তে সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা মানে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা। এছাড়াও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে ইসবগুলের ভুষি দারুণ কার্যকর। প্রতিদিন রাতে ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার মাধ্যমে একজন মানুষ তার উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধান করে
প্রতিদিন রাতে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে দুইটা চামচ ইসবগুলের ভুষি মিশিয়ে খাওয়ার মধ্য দিয়ে একজন মানুষ তার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে পারে যদিও এটি একটি ঘরোয়া উপায়। এসিডিটি বাড়ান থেকে পাকস্থলীতে রক্ষা করতে এটি পাকস্থলীর দেয়ালে এক ধরনের প্রতিরক্ষামূলক আবরণ তৈরি করতে সহায়তা করে। এবং হজম শক্তি ঠিক রাখার জন্য প্রয়োজনে এসিড নির্বাচনে ভূমিকা পালন করে থাকে ফলে গ্যাস্ট্রিক থেকে শুধু মুক্তিই নয় বরং গ্যাস্ট্রিক প্রতিরোধে দারুন উপকারী ঔষুধ হিসেবে কাজ করে এই ইসবগুলের ভুষি
ডায়রিয়া ও আমাশয় প্রতিরোধে সহায়তা করে
অনেক ডাক্তারদের মতে ইসবগুলের ভুষির আমাশয় ও জীবাণুর ধ্বংস না করতে পারলেও পেট থেকে সেসব জীবাণু বের করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। এর ফলে আমাশয় থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এছাড়াও ডায়রিয়া প্রতিরোধে টক দই মিশ্রিত এইসব গুলো বুঝি ভালো ফল দেয় এর পাশাপাশি পানি শূন্যতাও পূরণ করে থাকে। রাতে ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার উপকারিতা এটিও একটি অন্যতম।
হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে
আমরা প্রায় অনেকেই হজমজনিত সমস্যায় ভুগে থাকি। এক্ষেত্রে রাতে ইসবগুলের ভুষির খেলে এই হজম জনিত সমস্যা থেকে মুক্ত হওয়া যায় এসব ভুলের খুশি হজম প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক করে। এবং পাকস্থলীর গাত্র থেকে হজমে সহায়ক কেনা যাইম সংশ্লেষণ তুরান্বিত করে এসব গুলের ভুষি। এবং আমাদের হজম সহ শক্তিকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
প্রসাবের জ্বালাপোড়া থেকে পরিত্রাণ দেয়
অনেকেই প্রসবের সমস্যায় এবং জ্বালাপোড়ায় ভুগে থাকেন। প্রতিদিন রাতে নিয়মমাফিক ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার মাধ্যমে এই যন্ত্রণা থেকে মুক্ত হতে পারেন। যেকোনো ধরনের অস্বাভাবিকতা দূর করতে ইসবগুলের ভুষির দারুণ কাজে দেয়, যেমন পোষাবে জ্বালাপোড়া ইউরিন কম বা বেশি হওয়া এ ধরনের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় এসব গুলের ভুষি খাওয়ার মাধ্যমে।
ওজন কমাতে সাহায্য করে ও যৌন সক্ষমতা বৃদ্ধি করে
অনেকে নিজের ওজন কমানোর জন্য অনেক ধরনের পরিশ্রম করে থাকেন তাদের জন্য ইসবগুলের ভুষি হতে পারে দারুন বিকল্প, যদি কেউ খাবার তিরিশ মিনিট পূর্বে পানিতে গুলিয়ে এসব গুলোর ভুসি খায় তবে তার অতিরিক্ত খাবারের চাহিদা কমে যায়। যা মানব দেহের অতিরিক্ত চর্বি সংশ্লেষ করতে সাহায্য করে এবং ওজন কমিয়ে ফেলে, এবং বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের মতে যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর পূর্বে ইসবগুলের ভুষি খেতে পারেন।
ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার নিয়ম
প্রতিদিন এক থেকে দুই চা চামচ ইসবগুলের ভুষি এক গ্লাস পানি সাথে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এটি খাওয়ার আগে এবং পরে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে কারণ এটি পানি শোষণ করে। ইসবগুলের ভুষির পানিতে দ্রবীভূত হয়ে জেলের মত হয়ে যায় তাই এটি পানি বা দুধের সাথে মিশিয়ে খেয়ে ফেলা উচিত। আপনাকে ২৪০ মিলিমিটার পানি অর্থাৎ বড় এক গ্লাস পানির মধ্যে খুব ভালো করে এটি মিলিয়ে নিতে হবে এবং তারপরে খেতে হবে। ইসবগুল এক ধরনের ডাইটেরি ফাইবার যার কিছু পানিতে দ্রবীভূত হয় কিছু হয় না অন্তরের ভিতরে থাকালি এসবগুলোর ভুসি প্রচুর পরিমাণ পানি শোষণ করে কোন কিছুর সঙ্গে বিক্রিয়া করে ব্রিজ তৈরি করে না এবং অন্তরের দেয়াল পিচ্ছিল করে দেয় যেহেতু এটার কার্যকারিতা জন্য অন্তর থেকে পানি শোষণ করে তাই দুই চা চামচ ভুসি পানি বা দুধে গুলিয়ে সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে ফেলা ভালো দীর্ঘক্ষণ ভিজিয়ে রাখলে এটি বাইরে থেকে পানি শোষণ করে নেবে কার্যকারিতা কমে যাবে ২৪০ মিলিমিটার পানি ও এক থেকে দুই চা চামচ লেবুর রস দিয়ে মিশিয়ে সকালে খেলে এর ফল বুঝা যায়। এটি খাদ্যনালী ও পরিষ্কার করে এবং শরীরের চর্বি কমায় আর এ কারণে রাতে ইসবগুলের ভুষি খাওয়া যেতে পারে।
আরো পড়ুন : গর্ভাবস্থায় কচু শাক খাওয়ার উপকারিতা
কেন খাবেন ইসবগুলের ভুষি
যারা সচরাচর কোষ্ঠকাঠিন্য,হজম সমস্যা,ওজন সমস্যা ডায়রিয়া ও ডায়াবেটিস সমস্যা নিয়ে ভুগেন, তারা প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর পূর্বে নিয়ম করে ইসুবগুলের ভুষি খেতে পারেন। এটি আপনার আমাশয় ও হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। এবং আপনার জীবনকে করতে পারে আরও দ্বীপ্তিময়। এছাড়াও পেট ব্যথা আলসার জনিত সমস্যা এসিডিটি গ্যাস এই ধরনের সমস্যা থেকে সহজে পরিত্রাণ দিতে পারে এই ইসবগুলের ভুষি। শুকনা ঝরঝরে এই জিনিসটি পানিতে মেশানোর সাথে সাথে এতে পিচ্ছিল হয়ে যায় যা আমাদের শরীরের নানা রকম অসুখ ছাড়াতে অনেক উপকারী। ইসবগুলের ভুষি একটি বীজের খোসা এটি এক ধরনের দ্রব্য নিয়ো ফাইবার এটি নিজের ওজন থেকে ২৪ গুন বেশি পানি শোষণ করতে পারে। তবে অনেকের ধারণা ইসবগুলের ভুসি খেলে মোটা হওয়া যায় আসলে ইসবগুলের ভুষি খেলে মোটা হওয়া যায় না বরং এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে, এটি উচ্চ হয়বার যুক্ত হওয়ায় দীর্ঘক্ষণ পেট ভরে রাখে এবং খাবারের অতিরিক্ত চাহিদা কমায় যা শরীরের অতিরিক্ত চর্বি জমা হতে বাধা সৃষ্টি করে। এটি পানি কিংবা দুধে মেশানোর সঙ্গে সঙ্গে খেতে হবে, মনে রাখবেন আপনি যদি ইসুবপুর সঙ্গে সঙ্গে না পান করে ভিজিয়ে রাখেন তবে তা খুলে মোটা ও ঘন হয়ে যেতে পারে যা হিতে বিপরীত হতে পারে তাই এটি মিশিয়ে সাথে সাথেই খেয়ে নেওয়া উচিত।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url