গর্ভাবস্থায় কচু শাক খাওয়ার উপকারিতা
কচু দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সু পরিচিত এর কান্ড সবজি ও পাতা, সাক হিসেবে খাওয়া হয়। প্রচুর কান্ড এবং পাতা সবকিছুতেই প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি থাকে। কচু শাক অত্যন্ত সহজলভ্য একটি সবজি। কচুপাতা খুবই বিশেষ কচু শাক এবং শিকড় উভয়ই পুষ্টি ধারণ করে এবং উভয়ই বিভিন্ন খাবারের ব্যবহার করা যেতে পারে । গ্রাম বাংলায় এটি সচরাচর দেখা যায়।
তবে যে কোন কাঁচা শাক খাওয়ার আগে ভালোভাবে ধুয়ে নেওয়া উচিত এবং নিশ্চিত করতে হবে যে তাতে কোন ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া আছে কি নাই। শাক রান্না করে খেলে বেশি পরিমাণে খাওয়া সম্ভব হয় এবং পুষ্টি উপাদানও বেশি পাওয়া যায়। কচুর সাথে বিদ্যমান ফলেট একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখে এই ফলেট গর্ভাবস্থায় গর্ভনালি এবং গর্ভের ভ্রূণ নির্মাণে, বৃদ্ধি এবং বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কচু শাকের এই ফলেট শিশুর মস্তিষ্ক এবং স্পাইনাল কর্ডের উন্নত বিকাশেও সাহায্য করে
পেজ সূচিপত্র:
- কচুর শাকে কি ভিটামিন আছে
- গর্ভাবস্থায় শাক খাওয়ার উপকারিতা
- রক্তপাতের সমস্যা দূর করে
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
- হজম শক্তির বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে
- এটি মুখ ত্বকের রোগ ও চুল ওঠা বন্ধ করে
- হৃদরোগ, স্ট্রোক প্রতিরোধ ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি
- রাতকানা রোগ ও হিমোগ্লোবিন
- দাঁত ও হাড়ের গঠন ও জ্বর কমাতে সাহায্য করে
- কচু শাক লতি ও কচুরমুখী
- কচুর শাকে কি ভিটামিন আছে
কচুর সাথে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন রয়েছে যেমন ভিটামিন এ ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি । কচু একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর সবজি যা খাওয়ার ফলে অসংখ্য উপকার পাওয়া যায় তবে এর পাতাকে অকেজো ভেবে ভুল করবেন না । কচুর শাকের আকৃতি অনেকটা হৃদপিন্ডের মতো। যাতে অনেক ভিটামিন খনিজ লুকিয়ে থাকে। কচুর শাক খেলে দৃষ্টিশক্তি ভালো হয়। জয়েন্টের ব্যাথা হলে প্রতিদিন কচু শাক খেতে হবে তাহলে জয়েন্টের ব্যথা থেকে অনেকটাই মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
গর্ভাবস্থায় শাক খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় কচু শাক খাওয়ার উপকারিতা ক্যান্সার প্রতিরোধক গবেষণায় দেখা গিয়েছে নিয়মিত প্রচুর শাক খেলে খুব সহজে কোলন ক্যান্সার এবং মহিলাদের স্তন ক্যান্সার সহজে প্রতিরোধ করা সম্ভব। কচুর সাথে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে যার ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করে এ জন্য গর্ব অবস্থায় এবং স্বাভাবিক সময়ও মহিলা থেকে প্রচুর শাক খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা । গর্ভাবস্থায় কচু শাক খেলে মাতৃদুগ্ধ বৃদ্ধি পায় । জন্মের পর থেকে বাচ্চাদের প্রধান খাবার হয় মাতৃদুগ্ধ অনেক সময় মায়েদের বিভিন্ন কারণে বাচ্চারা পর্যাপ্ত পরিমাণ দুধ পায় না আর এই সমস্যা দূর করার জন্য একজন গর্ভবতী নারী সপ্তাহে ৪ থেকে পাঁচ দিন কচুর সাপ খেতে পারে।
রক্তপাতের সমস্যা দূর করে
গর্ভাবস্থায় অনেক গর্ভবতী মহিলাদের অক্সিজেন সরবরাহ বা শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয় অক্সিজেন সরবরাহ সচল রাখতে বেশ ভালো কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। এতে থাকা আইরন ও ফলের রক্তের পরিমাণ বাড়ায় যার কারণে অক্সিজেন সংবহন পর্যাপ্ত থাকে এবং পেতে থাকা ভিটামিন কে রক্তপাতের সমস্যা খুব সহজেই প্রতিরোধ করে থাকে।
আরও পড়ুনঃ শিশুদের জন্য কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভবতী মায়েদের জন্য ডাইবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখা অতি জরুরী। কচুর সাথে প্রায় দেড়শ গ্রাম কচুশাকে মাত্র এক গ্রাম ফ্যাট এবং খুবই সামান্য পরিমাণ চিনি রয়েছে যার কারণে এই সাত খেলে গর্ভবতী মহিলাদের কখনো ডায়াবেটিস বৃদ্ধি পাবে না। বরং কচুর শাক রক্তে শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণ এনে ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করবে।
হজম শক্তির বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে
গর্ভাবস্থায় বেশিরভাগ মহিলাদের মুখেই শোনা যায় যে খাবার খেলে তা সহজে হজম হচ্ছে না কিংবা অল্প খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিক জনের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এই সমস্যা দূর করার জন্য গর্ভবতী মেয়েরা খাদ্য তালিকায় এটি যুক্ত করতে পারেন কারণ এটি গর্ভবতী মেয়েদের হজম শক্তি বৃদ্ধি ছাড়াও গ্যাস্ট্রিকজনিত বিভিন্ন সমস্যা খুব সহজেই সমাধান করতে পারে। কচুর সাথে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি রয়েছে। আর ভিটামিন বি এর উপকারিতা হলো এটি আমাদের খাবার থেকে শক্তি শোষণ করতে অনেক বেশি সাহায্য করে যা কচুর সাথে অত্যাধিক পরিমাণ রয়েছে যার কারণে এটি গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
এটি মুখ ত্বকের রোগ ও চুল ওঠা বন্ধ করে
গর্ভাবস্থায় বেশিরভাগ মহিলাদের মুখে ঘা ও ত্বকের ব্রণ এজাতীয় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। এই সমস্যাগুলো মূলত গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের ভিটামিন বি ও ভিটামিন সি-এর অভাবে হয়ে থাকে। এর জন্য একজন গর্ভবতী নারী যদি গর্ব অবস্থায় নিয়মিত কচুশাক খায় তাহলে গর্ব অবস্থায় বিভিন্ন ধরনের ত্বক ও মুখের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধেও সমানভাবে ভূমিকা রাখবে কচু শাক। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী নারীদের সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয় চুলের এ সময় মহিলাদের অত্যাধিক পরিমাণে চুল ও তা জনিত সমস্যার সৃষ্টি হয় এ সমস্যা দূর করতে পারে কচু শাক।
হৃদরোগ, স্ট্রোক প্রতিরোধ ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি
কচুর সাথে অত্যাধিক মাত্রায় পটাশিয়াম রয়েছে যার কারণে হৃদ রোগ ও স্ট্রোকে ঝুঁকি অনেকটাই কচুর শাকের মাধ্যমে কমানো সম্ভব এছাড়াও এ শাকের রক্ত খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে যার ফলে উচ্চ রক্তচাপে ভুক্তভোগী একজন গর্ভবতী মহিলা তার খাদ্য তালিকায় কচু শাক রাখতে পারে। যেহেতু কচুর সাথে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে তাই চিকিৎসকদের মতে গর্ব অবস্থায় কচু শাক খেলে গর্ভে থাকা সন্তানের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং জ্ঞান অনেক ভালো হয়।
রাতকানা রোগ ও হিমোগ্লোবিন
কচু শাক ভিটামিনের খুব ভালো উৎস। রাতকানা রোগসহ ভিটামিনের অভাবে হওয়া সকল ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে কচু শাক অত্যন্ত ভূমিকা রেখে থাকে। এটি দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে এছাড়াও চোখের নানা রকম জটিলতা কমায় ও নানা সমস্যার সমাধান করে। আমাদের শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ রাখতে কচুশাক অনেক বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। কচু শাক আয়রন সমৃদ্ধ বলে এর সমাধার অনেক বেশি আমাদের শরীরের রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে সব ডাক্তাররাই কচু শাক খাওয়ার পরামর্শ দেন।
দাঁত ও হাড়ের গঠন ও জ্বর কমাতে সাহায্য করে
কচুর সাথে সবচেয়ে বড় উপকারিতা হলো এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম ম্যাঙ্গানিজ ও ফসফরাস। যা আমাদের দাঁত ও হাড়ের গঠনে এবং ক্ষয় রোগ প্রতিরোধে প্রচুর শাকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোন রোগীকে জ্বরের সময় যদি দুধ কচু রান্না করে খাওয়ানো যায় তাহলে জ্বর অতি দ্রুত সেরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
কচু শাক লতি ও কচুরমুখী
শাক কচু শাক কচু গাছের পাতা থেকে সংগ্রহ করা হয়। কচুর সাথে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ ভিটামিন ভিটামিন সি ক্যালসিয়াম আয়রন পটাশিয়াম ফাইবার ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান রয়েছে। কচুর লতি কচুর গাছের লতি থেকে সংগ্রহ করা হয় এটি একটি সুস্বাদু সবজি যা বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যায় যেমন প্রচুর লতি চচ্চড়ি কচুর লতি ঝোল প্রচুর লতি মাছের ঝোল কচুর লতি দিয়ে মুরগির মাংসের ঝোল ইত্যাদি, এটিও পুষ্টিকর সবজি এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ ভিটামিন ডি ভিটামিন সি ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম রয়েছে যা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url