লাল শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা
আধুনিকতার সাথে তাল মিলাতে গিয়ে আমরা নিজেদের অস্তিত্বকে ভুলতে চলেছি। তাই শাকসবজি ডায়েট থেকে বাদ দিয়ে ক্ষতিকারক সব ফাস্টফুড হয়ে উঠেছে আমাদের নিত্যদিনের খাবার। আর এই কারণে আমরা ভুগি নানা রকম রোগে। বিশেষজ্ঞদের মতে আমাদের হাতের নিকটে পাওয়া যায় এমন সব শাকসবজি নিয়মিত খেলেই আমাদের স্বার্থের উপকার মিলবে, আর নিকটে পাওয়া যায় এমন শাকসবজির মধ্যে লাল শাক অনেক পরিচিত এবং উপকারী একটি শাক।
লাল শাককে বলা হয় কোলেস্টরলের যম। রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে গেলে তার রক্তনালীর ভেতরে জমে রক্ত প্রবাহকে বাধাগ্রস্থ করে থাকে এতে হার্ট অ্যাটাক স্টক সহ একাধিক রোগে আক্রান্তের ঝুঁকি বাড়ে। তাই বিশেষজ্ঞরা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর পরামর্শ দেন, আর এক্ষেত্রে লাল শাক অনেক উপকারী, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে লালসাকে এমন কিছু এন্টিঅক্সিডেন্ট হয়েছে যা খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করবে।
আরো পড়ুন :পাকা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
পেজ সূচিপত্র: লাল শাক হজমের সমস্যা দূর করে
- লাল শাক হজমের সমস্যা দূর করে
- লালশাক হার শক্ত করে
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে লাল শাক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে
- ক্যান্সার প্রতিরোধক
- কিডনি জনিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে
- গর্ভাবস্থায় লাল শাক খাওয়ার উপকারিতা
- লাল শাকের অপকারিতা
- লাল শাকে যে সমস্যা রয়েছে
- মন্তব্য
লাল শাক হজমের সমস্যা দূর করে
অনেকেই নিয়মিত বদহজমের সমস্যায় ভুগে থাকেন এ ধরনের সমস্যাকে গোড়া থেকে বিনাশ করতে চাইলে নিয়মিত লাল শাক খাওয়া উচিত কারণ লাল শাকে রয়েছে প্রচুর ফাইবার যা হজমের সমস্যা সমাধানে জাদুর মত কাজ করে। এ কারণে যাদের হজমজনিত সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত লাল শাক খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন এতে করে আপনার বদহজমের সমস্যা দূর হবে এমনটা আশা করা যায়।
লালশাক হার শক্ত করে
লাল শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম যা হারকে শক্ত করতে বেশ সাহায্য করে। হারকে শক্ত করতে চাইলে ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরি, আর ক্যালসিয়াম এর ঘাটতি পূরণ করতে লাল শাকের কার্যকারিতা অপরিসীম। হাড়ের ক্ষয়জনিত অসুখ যাদের রয়েছে এটি মূলত ক্যালসিয়ামের ঘাটতির কারণে হয়ে থাকে তাই তারা নিয়মিত লাল শাক খেয়ে খেয়ে এই ঘাটতি পূরণ করতে পারেন।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে লাল শাক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে
শাখের মধ্যে লাল শাক এমন একটি শাক যাতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ পটাশিয়াম যার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে মহা ওষুধ হিসেবে কাজ করে থাকে। বিশেষ করে যাদের হাই প্রেসার রয়েছে তারা নিয়মিত লাল শাক খেলে তাদের রক্তচাপে সমস্যা থেকে মুক্ত হতে পারে। এর মাধ্যমে শুধু পেশারই কমবে না বরং হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের মতো অসুখে আক্রান্ত হওয়ারও ঝুঁকি কমায়।
ক্যান্সার প্রতিরোধক
লাল শাক এমন একটি শাক যা ক্যান্সার প্রতিরোধ ক কারণ এতে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এছাড়াও লাল শাকের রয়েছে অ্যামাইনো এসিড আইরন ম্যাগনেসিয়াম ফসফরাস ভিটামিন এ পটাশিয়াম এবং ভিটামিন সি যা শরীরের একাধিক টক্সিক উপাদান দূর করে , সেই সাথে ক্যান্সারের কোষ যেন জন্মাতে না পারে সেদিকেও এটি পরিপক্ক হবে খেয়াল রাখে। তাই যারা নিয়মিত লাল শাক খান তারা ক্যান্সার থেকে অনেকটাই দূরে থাকতে সক্ষম।
আরো পড়ুন :মিষ্টি আলু উপকারিতা ও অপকারিতা
কিডনি জনিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে
কিডনিকে ভালো রাখতে ও কিডনিকে পরিষ্কার রাখতে লাল শাক খুব ভালো ও কার্যকর হিসেবে কাজ করে, গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মিত লাল শাক খেলে একদিকে যেমন কিডনির কর্ম ক্ষমতা বাড়ে তেমনি অন্যদিকে রক্তে উপস্থিত একাধিক ক্ষতিকর উপাদান শরীর থেকে বের হয়ে যায়। তাই বলা যেতে পারে যারা কিডনির জনিত সমস্যায় ভোগেন তাদের জন্য লাল শাক অত্যন্ত কার্যকর।
গর্ভাবস্থায় লাল শাক খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় লাল শাক খাওয়ার উপকারিতা অনেক যদি কোন মা গর্ভাবস্থায় নিয়মিত লালশাক খেতে পারেন তাহলে তার শরীরে ভিটামিনের চাহিদা পূরণের সাথে সাথে তার গর্ভে থাকা শিশুর শারীরিক গঠন বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। গর্ভবতী মায়ের ভিটামিন যুক্ত ও পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের ফলে পেতে থাকা সন্তানের দেহের স্বাভাবিক গঠন ও মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটে। আর গর্ভবতী অবস্থায় প্রতিটি মাইরি উচিত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া বিশেষ করে যেসব খাবারে ভিটামিন ও পুষ্টি রয়েছে আর লাল শাক ভিটামিন ও পুষ্টির জন্য অন্যতম।
লাল শাকের অপকারিতা
লাল শাক সাধারণত স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর অপকারিতাও রয়েছে যেমন অতিরিক্ত খেলে গ্যাস পেট ফাঁপা বা কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং এটি কাঁচা খাওয়া উচিত নয় এবং যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এটি এড়িয়ে চলাই ভালো।
লাল শাকে যে সমস্যা রয়েছে
- লালশাক অতিরিক্ত খেলে গ্যাস ও পেট ফাঁপার মতো সমস্যা হতে পারে।
- বিশেষ করে কিডনি রোগীদের জন্য এটি ক্ষতির কারণ হতে পারে তাই এ ধরনের রোগীদের এটি খাওয়া উচিত নয়।
- এলার্জির ঝুঁকি রয়েছে অনেক কিছু মানুষের লাল শাকের প্রতি এলার্জির ঝুঁকি থাকতে পারে এক্ষেত্রে তারা এ থেকে বর্জন করুন।
- এটি অতিরিক্ত আয়রন গ্রহণে কিছু জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে, তাই বলা চলে এটি আয়রনের জটিলতা সৃষ্টি করে।
- এটিকে কাঁচা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন, কারণ এটি কাঁচা খেলে উপকার তো আসবেই না বরং এর থেকে বড় ধরনের কোন ক্ষতি সম্ভাবনা রয়েছে।
মন্তব্য
বাংলাদেশের লাল শাক এমন একটি শাক যা অনেক সহজলভ্য এবং পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই সাথে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন যা ভিটামিনের একটি প্রকার একে চোখের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও উপকারী। এছাড়াও এতে রয়েছে পটাশিয়াম এটি শরীরের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ একটি মিনারেল একটি হৃদয় ও মাংসপেশির ক্রিয়া-কলাপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ । এছাড়াও রয়েছে ক্যালসিয়াম এটি শরীরের হাড় তল ও দাঁতের জন্য প্রয়োজনীয়। এটি সুস্থ হার ও দাঁতের উপকারিতা প্রদান করে থাকে । তাই বলা যেতে পারে লাল শাকিয়ে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন পটাশিয়াম ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন এ সি ও ভিটামিন কে যা চোখের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যা যা প্রতিরক্ষা বাধ্যতাকে বৃদ্ধি দেয় , তাই আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত লালশাককে রাখতে পারেন তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন সেটা অতিরিক্ত খাওয়া না হয়ে যায় বিশেষ করে যারা এলার্জি এবং কিডনি রোগী রয়েছেন তারা এটিকে এড়িয়ে চলাই ভালো।

.webp)
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url